দেখো আমিও বদলে গেছি

ডিপ্রেশন জয় করার গল্প
ফিরে আসার গল্প
কয় মাস আগে সময়টা খুবই খারাপ ছিল আমার জন্য..! জীবনের একটা কালো অধ্যায় ছিল..!
অনেক গুলো বাধার সম্মুখীন হই..!
এক সাথে অনেক গুলো ঘটনা ঘটে আমার সাথে, যার কারণে জীবন পুরোটা এলো মেলো হয়ে যায়..!
কোন কিছুতেই মন নেই..!
না কাজে, না পড়াশুনায় ..!
মনে হচ্ছিল এখানেই সব শেষ...!
সব কিছু থেকে দূরে ছেড়ে চলে গিয়েছিলাম..!
এখনো দূরেই..! তবে বেশি দূরে আর নেই..!
ডিপ্রেশন, অনিদ্রা ভেতরে একটা হাহাকার কাজ করতো..!
যারা আমার সাথে অনেক বছর ধরে আছেন বা অনেক কাছ থেকে দেখেছেন তারাই কেবল জানেন..!
একটা সময় সব কিছু ছেড়ে দিলাম..!
তারপর শুরু থেকে আবার সব শুরু করলাম..!
আস্তে আস্তে নিজেকে ঠিক করার মিশন শুরু করলাম..!
এবং এখন পর্যন্ত আমি সফল..!
অনেকটাই রিকভার হয়ে গিয়েছি..!
আসলে মানুষের নেশাটা, মাদকের চেয়েও ভয়ংকর..!

-------
ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি পেতে হলে আমি যে সকল সাজেশন দিবো..!
ডিপ্রেশন অনেকটাই চুইংগামের মত, চিবাইতে চিবাইতে তেতো হয়ে যায় ।
আর আমাদের সমস্যা হলো আমরা সেই তেতো চুইংগামটাই চিবাইতে থাকি চিবাইতে থকি এবং চিবাইতে থাকি...!
তাই সর্ব প্রথম থুঃ দিয়ে চুইংগামটা ফেলে দেও যত দূরে সম্ভব..!
যাকে নিয়ে সমস্যা বা যে বিষয় নিয়ে সমস্যা, তার আশে-পাশে, তার স্মৃতি মাখা সব কিছু ছেড়ে দেও...!
পার্মানেন্ট ভাবে দূরে যাও.!
যার থেকে দূরে যেতে আগে তাকে বাধ্য করো তোমার থেকে দূরে যেতে, তারপর তুমি দূরে চলে যাও..!
তারপর, একটা রুটিন তৈরি করো ।
জীবনটা একটা রুটিনের মধ্যে নিয়ে আসো..!
পুরনো বন্ধু সব ছেড়ে দেও..!
নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হও..!
একটা লক্ষ্য নির্ধারণ করো..!
তোমার পায়ে বল থাকুক আর না থাকুক তোমাকে দৌড়াতে হবে, যদি পুরো ম্যাচে একবারও তুমি বল পায়ে না পাও তবুও রেফারীর শেষ বাঁশি বাজানোর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত তোমাকে খেলে যেতে হবে।
জীবনটা এমনই। প্রথমে একটা লক্ষ্য ঠিক কর, তারপর দৌড়াতে থাকো। ভাগ্য তোমার সাথে থাকুক আর না থাকুক তুমি নিজেকে কখনো ভাগ্যের হাতে ছেড়ে দেবে না। তুমি যদি নিজেই নিজের ভাগ্য বদলাবার চেষ্টা না কর তাহলে কীভাবে আশা কর যে ভাগ্য নিজ থেকে এসে তোমার জীবন বদলে দেবে ?
সমস্যা নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করবে না। একটা সমস্যা শেষ হবার পর আরেকটা সমস্যা শুরু হবে। তুমি শুধু দৌড়াতে থাকবে। কেউ তোমার পায়ের বল কেড়ে নেবার চেষ্টা করবে না, তুমি নিশ্চয়ই এরকম কোন হাস্যকর প্রতিযোগিতা আশা করো না !
কান দেবার দরকার নেই, যারা তোমাকে গালাগাল করছ। তুমি কান দিলেই তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে। গ্যালারীর সব দর্শক কখনোই তোমার পক্ষের মানুষ হবে না।
তোমার হেরে যাবার আনন্দে কেউ কেউ রাতভর পার্টি করবে। তুমি তখনো দৌড়াতে থাকবে। মনে রাখবে তুমি হেরে গেলেই তারা সফল হবে না; তারা সফল হবে তখনই যদি তুমি থেমে যাও।
সফল মানুষদের সফল হবার গল্প শুনতে আমাদের ভালো লাগে। তাদের জীবনী পড়ার পর রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায়। ইচ্ছে হয় এখনই একটা কিছু করে বসি। কিন্তু সেই জোরটা বেশিদিন থাকে না কেননা মাথার ভেতরে জেদটা তখনো পাকাপুক্ত ভাবে স্থির হয়নি। দু একটা ঠুনকো বাঁধায় উৎসাহে ভাটা পড়ে।
লেখক মোস্তাক আহ্‌মাদের একটা বই পড়েছিলাম, সবাই জান্নাতে যেতে চায় কিন্তু কেউই মরতে চায় না। আমাদের অবস্থাও অনেকটা এরকম। সবাই সফল হতে চায় কিন্তু কেউই পরিশ্রম করতে চায় না।
সফল হবার প্রথম শর্ত পরিশ্রম করা না। তাহলে ছাগলরাই বনের রাজা হত। তুমি তত বেশি সফল হবে যত বেশি ব্যার্থতা তুমি সহ্য করতে পারবে। তুমি কত দ্রুত দৌড়াতে জানো তার চাইতেও বেশি জরুরি কত বেশি সময় ধরে তুমি দৌড়াতে জানো।
সফল মানুষের গল্প শুনবে তবে সফলতার গল্প না, তোমার বেশি কাজে আসবে তাদের ব্যার্থতার গল্প গুলো। এওয়ার্ডের গল্প শোনার চাইতে এর পেছনের শত নিঃসঙ্গ রাতের নিদ্রাহীন ব্যার্থতার গল্প , তোমাকে শেখাবে কীভাবে একের পর এক বাঁধা বিপত্তি চড়াই উতরাই পার করে সামনে এগোতে হয়।
তুমি যদি প্রতিদিন এই ভেবে দিন শুরু কর যে, আজই তোমার জীবনের শেষ দিন তাহলে একদিন অবশ্যই নিশ্চিত ভাবে তোমার সেই ভাবনাটা সত্যি হবে!
স্টিভ জবস প্রতিদিন সকালে আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজেকে জিজ্ঞাসা করতেন , আজ যদি আমার জীবনের শেষ দিন হত, আমি কী তাই করতাম যা আমি আজ করছি ?
যদি পরপর কিছুদিন এই প্রশ্নের জবাব ' না' হত, তাহলে তিনি বুঝে ফেলতেন যে তার জীবনের পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনতে হবে।
শুরু করে দাও... প্রথমে একটা লক্ষ্য ঠিক কর, তারপর দৌড়াতে শুরু কর।
আর আমার ডিপ্রেশন দূর করতে সব চাইতে বেশি সহায়ক ছিল ফটোগ্রাফি এবং ইচ্ছা শক্তি ..!
মেডিটেশন করো, মানসিক ভাবেও নিজেকে শক্তিশালী করার জন্য..!
আর সর্বপ্রথম সুখি হতে শিখো..!
জীবনে বেঁচে থাকার জন্য দুটি জিনিস খুব হিসেব করে খরচ করতে হয়। একটি হল মুদ্রা আর অন্যটি সময়। কোথায় কী পরিমাণ মুদ্রা খরচ করতে হবে সেটা জানা যেমন জরুরী তেমনি এটাও জানা জরুরী; কোথায় কতটুকু সময় খরচ করতে হয়।
মুদ্রার দিক দিয়ে কেউ কেউ খুব ধনী, কেউ খুব গরিব; সময়ের দিক দিয়ে প্রত্যেকেই গরিব। তবু আফসোস , মানুষ মুদ্রার জন্য সময় খরচ করে কিন্তু সময়ের জন্য মুদ্রা খরচ করে না।
জীবনে বেঁচে থাকার সব চাইতে বড় ট্র্যাজেডি হল সুখ এবং সাফল্য। সবাই সফল হতে চায় সুখী হবার জন্য অথচ সাফল্য তাকে সুখ এনে দেয় না। ইতিহাসের সিংহাসনে বসে পৃথিবীর বাদশাকে কাঁদতে হয়েছে। পৃথিবীর অন্যতম ধনকুবকে বিষ খেয়ে বাথরুমে পড়ে থাকতে হয়েছে।
সুখ - সেটা একটা কবিতা থেকেও জন্ম নিতে পারে। কোন অর্থ বহন করে না, এরকম কোন কবিতা হতে পারে। কবিতার মত দেখতে কিন্তু কবিতা না- এরকম কোন কবিতা হতে পারে।
নিজেকে ভালোবাস...!
নিজেকে চিনো...!
সব কান্না একদিন শেষ হয়।
ইতিহাস ঘেটে দেখো, কাউকে না পেয়ে দু দিন দরজা বন্ধ করে শুয়ে থাকা... দু দিন না খেয়ে থাকা , সাহসের অভাবে ছাদ থেকে লাফিয়ে মরতে না পারা মানুষ গুলা এক সময় স্বাভাবিক হয়ে উঠে। প্রত্যেকে হাসি হাসি মুখে কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ে করে। ডেকারেশন ঠিক মত হয়েছে নাকি সেই তদারকিও করবে।
পরিসংখ্যান তাই বলে।
আপনার আশে পাশের ব্যার্থ প্রেমিক অথবা প্রেমিকাদের দিকে তাকান। ক্যালেন্ডারে একটা দাগ দিন। নিশ্চিত থাকুন এরা প্রত্যেকেই একদিন হাসি হাসি মুখে কমিউনিটি সেন্টারে যাবে... প্রত্যেকেই একদিন স্বাভাবিক হবে।
শুধু কিছু একটা থেকে যাবে... সেই একটা কিছুর ভেতরে কোন কিছুই নেই। ' কোন কিছু নেই' এর ভেতরে আবার একটা কিছু থাকে।
আগুন নেভানোর পর আগুন নিভে যায় তবু একটা লালাভ ফুল্কি থাকে। সেটা আগুন না। আগুনের ছায়া।
বলতে গেলে অনেক বলা যাবে..!
পোস্টও অনেক বড় হয়ে যাবে কিন্তু বলা শেষ হবে না...!
আজকে রাইডের পর বাসায় ফেরার সময়, যেখানে দাঁড়িয়ে দুজন কোক খেতাম, সেখানে বসে একটা সেভেন আপের বোতল হাতে নিয়ে অনেক কিছু ভাবলাম..!
যে একটা মানুষ এর জন্য, আজ সব..!
তার জন্য একটা বছর জীবন থেকে নষ্ট হলো..!
দোয়া করি এই একটা বছর যেন তার জীবনে বার বার ফিরে আসে...!


যাই হোক..!
আমিও আবার জীবন যুদ্ধে ফিরে এলাম..!
এবার ক্যারিয়ার গড়ার এবং স্বপ্ন পূরণের যুদ্ধ..!

Comments

Popular posts from this blog

''অনেক বছর পর সে এই চেনা নগরীতে''

War for the Planet of the Apes

These 2 Samsung smartphones beat Apple iPhone X as the highest-selling smartphones globally